ডানা থাকা সত্ত্বেও যে পাখিগুলো উড়তে পারে নাঃ
পৃথিবীতে এমন কিছু পাখি আছে যাদের ডানা থাকা সত্ত্বেও উড়তে পারে না। আজকে আমি এমন কয়েকটি পাখি সম্পর্কে আলোচনা করব।
উটপাখিঃ
উটপাখি-http:// www.topbanglapages.com |
খাদ্যাভ্যাসের দিক থেকে উটপাখি তৃণভোজী হলেও এটি প্রায়ই অমেরুদণ্ডী প্রাণী শিকার করে। এরা দলবদ্ধ জীব। ৫ থেকে ৫০টি সদস্যের যাযাবর দলে এরা ঘুরে বেড়ায়। হরিণ, জেব্রা, প্রভৃতির সাথেও দল বেঁধে চলাফেরা করে। বিপদে পড়লে উটপাখি সাধারণত শুয়ে লুকিয়ে পড়ে অথবা দৌড়ে পালিয়ে যায়। কোণঠাসা হয়ে পড়লে শক্তিশালী পা দিয়ে লাথি দেয় বা শক্ত ঠোঁট দিয়ে ঠোক দেয়। অঞ্চলভেদে প্রজননে বিভিন্নতা দেখা দেয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি পুরুষ তার নিজস্ব এলাকা দখল করে ফেলে।বিশ্বে উটপাখি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। বিশ্ববাজারে এর চামড়া, মাংস, পালক ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
ইমু পাখিঃ
emu pakhi-http:// www.topbanglapages.com |
অস্ট্রেলিয়ার একটি ব্যতিক্রমী পাখির নাম হলো ইমু, যারা উড়তে অক্ষম। অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের বৃহত্তম এই পাখিটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখি হিসেবে পরিচিত। পাখিটি উচ্চতায় প্রায় মানুষের সমান হয়ে থাকে। গড়ে ইমু পাখির উচ্চতা প্রায় পাঁচ ফুট এবং ওজন প্রায় ৪৫ কেজি। উড়তে না পারলেও ইমুরা দ্রুতগতিতে দৌড়াতে পারে। ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেগে ইমুরা ছুটতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার বিস্তৃত সমতল ভূমি আর ঝোপঝাড়ের মধ্যে এই পাখি বাস করে। শান্ত স্বভাবের এই পাখি ফলমূল, ঘাসপাতা খেয়ে থাকে। মেয়ে পাখিরা ডিম দিয়ে তা মাটিতে ছোট গর্ত করে লুকিয়ে রাখে। ইমুদের সবুজ রঙের ডিমগুলো দেখতে খুবই সুন্দর। এই ডিমগুলোর ওজন এক কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। মজার ব্যাপার হলো, ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর দায়িত্ব পুরুষ ইমুদের। পুরুষ ইমুরা ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটানো এবং বাচ্চাদের দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করে থাকে। একেকটি ইমু ১০-২০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। বর্তমানে এই পাখিগুলোর অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। একসময় ইউরোপে ইমুর চর্বি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। সে সময়ে বহু ইমু হত্যা করা হয়। পরে অস্ট্রেলিয়া সরকার আইন করে ইমু হত্যা বন্ধ করে তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
কিউই পাখিঃ
kiwi pakhi-http:// www.topbanglapages.com |
নিউজিল্যান্ডের জাতীয় পাখির নাম হল কিউই। বিপন্ন এই পাখিটি শুধুমাত্র নিউজিল্যান্ডেই পাওয়া যায়। কিউই পাখি হলেও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের অনেক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে এদের মিল রয়েছে। শরীরের পালক স্তন্যপায়ীদের শরীরের লোমের মতো পাতলা ও চিকন, মানুষের মতো এদেরও অস্থিমজ্জা থাকে। সারা বিশ্বে এটিই সম্ভবত একমাত্র পাখি যার নাসারন্ধ্র অবস্থিত চঞ্চুর একদম শেষ প্রান্তে। এদের দৃষ্টিশক্তি খুব ক্ষীণ, দিনের বেলায় মাত্র ২ ফুট দূরত্বে দেখতে পারে। আর এ কারণেই অত্যন্ত প্রখর ঘ্রাণশক্তির মাধ্যমে এরা খাদ্য খুঁজে বের করে। এদের শরীরে পাখনা থাকলেও উড়তে পারে না। অন্যান্য পাখির একটিমাত্র গর্ভাশয় থাকলেও স্ত্রী কিউই পাখির গর্ভাশয় দুটি। এরা নিশাচর প্রকৃতির পাখি। এদের প্রধান খাদ্য কেঁচো হলেও শামুক, ঘুণপোকা, মাকড়সা, বিছেসহ বিভিন্ন উদ্ভিদের বীজ, ফল ইত্যাদি খেয়ে থাকে। এরা সাধারণত ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং স্ত্রী পাখি পুরুষ পাখির চেয়ে আকারে বড়। মজার বিষয় হল- অন্যান্য পাখির সঙ্গে তুলনা করলে শরীরের আকারের পরিপ্রেক্ষিতে এরা সবচেয়ে বড় ডিম পাড়ে।
বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিও টি দেখুন :
0 coment rios: