বাংলাদেশের কিছু মুসলমান লেখক ও সাহিত্যিক বিখ্যাত বনে যাওয়া সত্ত্বেও তারা স্বঘোষিত নাস্তিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। আজকে আমি সর্বকালের সবচেয়ে বিখ্যাত ৭ জন বাঙালী নাস্তিক সম্পর্কে আলোচনা করব তাদের নামধাম ও পরিচয় জানলে আপনারা অবাক হবেন।
হুমায়ুন আজাদঃ
একুশে পদক প্রাপ্ত কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক এবং রাজনীতিক ভাষ্যকার। তিনি জন্মসূত্রে মুসলমান হলেও স্বঘোষিত নাস্তিক। স্বঘোষিত নাস্তিক হওয়ার কারণে ধর্মালম্বীরা অনেকে তাকে মুরতাদ বা ধর্মত্যাগী ঘোষণা করেন।তার কয়েকটি কুখ্যাত উক্তি আমার চোখের সামনে আমার মেয়ে বড় হচ্ছে কিন্তু ধর্মের বেড়াজালে আমার হাত পা বাধা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের দেখলে চুইং গামের মত চিবাতে ইচ্ছা করে। এসকল উক্তির মাধ্যমে বোঝা যায় তিনি একজন নাস্তিক ছিলেন। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বইমেলা থেকে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাসায় যাওয়ার পথে আততায়ী আক্রমণের শিকার হন তিনি।
তসলিমা নাসরিনঃ
তসলিমা নাসরিন একজন চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। তার রচনা ও ভাষণের মাধ্যমে লিঙ্গসমতা, মুক্তচিন্তা, ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদ ও মানবাধিকারের প্রচার করায় ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীদের রোষানলে পড়েন ও তাদের নিকট হতে হত্যার হুমকি পেতে থাকায় ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ ত্যাগ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করতে বাধ্য হন। তিনার কুখ্যাত কয়েকটি উক্তি হল ছেলেরা যেমন দাঁড়িয়ে প্রসাব করে মেয়েরাও তেমনি দাঁড়িয়ে প্রসাব করবে। ছেলেরা যেভাবে খালি গায়ে ঘুরে বেড়াতে পারে তেমনিভাবে মেয়েরাও খালি গায়ে বেড়াতে পারবে।
শামসুর রাহমানঃ
তিনি ছিলেন একজন লেখক ও সাহিত্যিক। তবে তিনি ছিলেন একজন নাস্তিক। তিনার একটা কুখ্যাত উক্তি আযানের ধ্বনি বেশ্যার খদ্দেরের ডাকের ধ্বনির মত লাগে। তার মৃত্যুর সময় একবার তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল মৃত্যুর পরে আপনার কবর কোথায় হবে আপনি কি ঠিক করেছেন। তিনি জবাবে বলেছিলেন আমার কবর হোক আমি এটাই চাই না। এছাড়াও তার লেখনিতে অনেক নাস্তিকতার পরিচয় মেলে।
ব্লগার আহমেদ রাজীবঃ
তিনি মোহাম্মদ সঃ কে মোহাম্মক বলতেন। মোহাম্মক এমনি উস্তাদ চাপাবাজ ছিল যে তার চাপার কোন মা-বাপ ছিল না! সে নিজেকে জাতে তোলার জন্য এমন একজনের বংশধর বলে দাবী করে বসেছে যে লোকটার কোন অস্তিত্বই ছিল না! লোকটার নাম ইব্রাহিম!মোহাম্মদ লুইচ্চামীর জন্য খাদিজার কাছে মাইর খাইতো নিয়মিত। যেমন তেমন মাইর না, তার পিঠ-মোবারকে খাদিজার পবিত্র জুতার বাড়ি। তাই নিজের সম্ভ্রম-শরীফ রক্ষা করার জন্য চাপা মারায় উস্তাদ মোহাম্মদ পিঠে খাদিজার পেন্সিল হিলের গর্ত ঢাকতে গল্প ফেঁদে বসছিল, সেই গল্পই আমরা এখন নব্যুয়তের মোহরের গল্প বলে জানি। এছাড়াও তিনি আরও বলেছেন,রাতের বেলা বিবির পাশ থেকে উঠে আরেক বেটির বাড়িতে যাওয়ার সবচেয়ে ভাল সময় হইলো মাঝ রাত আর সুবে সাদিকের মধ্যের সময় যখন বিবির ঘুম আর রাইতের আন্ধার দুইটাই খুব গাঢ়। তাই ঠিক ঐ সময় আন্ধারে মোহাম্মদ অভিসারে বাইর হতো। রাস্তায় কেউ দেখে ফেললে চাপা মারতো তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে যায়। সেই থেকে মুসলমানগো তাহাজ্জুতের নামাজ পড়া শুরু।
আসিফ মহিউদ্দিনঃ
আসিফ মহিউদ্দিন একজন ব্লগার। তিনি ব্লগারের মাধ্যমে ইসলামের অপপ্রচারের যাত্রা শুরু করেন। ইসলাম সম্পর্কে নানারকম অযৌক্তিক কথাবার্তা লিখলে তার উপর কিছু যুবক ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করেন। বর্তমানে তিনি জার্মানিতে আছেন এবং সেখানে বসেই ইসলাম সম্পর্কে নানারকম সমালোচনা করছেন। আসিফ মহিউদ্দিন নিজেদের উদারপন্থী মুক্তচিন্তার নাস্তিক হিসেবে দাবী করে থাকেন। তারা দীর্ঘদিন থেকেই মুক্তচিন্তার নামে ধর্মকে, বিশেষ করে ইসলামকে নানা ভাবে হেয় করে আসছেন। একজন মানুষ তখনই নিজেকে সুস্থধারার মুক্তচিন্তার দাবী করতে পারেন, যখন তার আচরনে কোন আক্রোশ বা বিদ্বেষ প্রকাশ না পেয়ে বরং যৌক্তিকভাবে তার অভিমত প্রকাশ পাবে। আসিফ মহিউদ্দিন তাদের মুক্তচিন্তার মুখোশের আড়ালে ইসলামের প্রতি তাদের বিদ্বেষকে ঢেকে রাখতে পারেননি। সেটা তাদের বিভিন্ন লিখা থেকেই প্রকাশ পায়।
শফিক রেহমানঃ
শফিক রেহমান একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। বাংলাদেশে বিজাতীয় প্রথা ভালবাসা দিবসের প্রবর্তক এবং একজন টিভি উপস্থাপক। এছাড়াও তিনিই সর্বপ্রথম বাংলাদেশে লিভ টুগেদার নামক চিন্তা ধারার বিকাশ ঘটান। তার কারণে বাংলাদেশে লিভ টুগেদার সিস্টেম বর্তমানে বাংলাদেশে চালু হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে সমকামিতার অভিযোগ রয়েছে।
দাউদ হায়দারঃ
সংবাদের সাহিত্যপাতায় "কালো সূর্যের কালো জ্যোৎসায় কালো বন্যায়" শিরোনামে কবিতা প্রকাশিত হবার পর অনেকে ধারণা করে ঐ কবিতায় মুহম্মদ যিশু এবং গৌতম বুদ্ধ সম্পর্কিত অবমাননাকর উক্তি ছিল যা ধর্মানুসারীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছিল।১৯৭৪ সালে তিনি নবী ও রাসুলদের নিয়ে একটি বিতর্কিত কবিতা লিখেছিলেন এবং সেটিকে মসজিদে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। তার এই লেখালেখির কারণে দেশ থেকে নির্বাসিত হন।
আমি একজন অতি সামান্য মানুষ। পেশায় একজন লেখক,ব্লগার এবং ইউটিউবার। লেখালেখি করতে খুব ভালো লাগে। আমার এই সামান্য প্রয়াসের মাধ্যমে মানুষের কিছু শেখাতে পারা ও বিনোদন দেওয়ার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পায়।
0 coment rios: