মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৭

যেখানে পৌঁছালে চলন্ত জাহাজ ও উড়োজাহাজ যাত্রীসহ উধাও হয়ে যায়।

যেখানে পৌঁছালে চলন্ত জাহাজ ও উড়োজাহাজ যাত্রীসহ উধাও হয়ে যায় আর ফিরে আসে না ঃ

যেখানে পৌঁছালে চলন্ত জাহাজ ও উড়োজাহাজ যাত্রীসহ উধাও হয়ে যায়
Bermuda Triangle-http://www.topbanglapages.com/

বিশ্বের যতোগুলো রহস্য নিয়ে এতদিন ধরে মানুষের সবচেয়ে বেশি জানার উৎসাহ ও জিজ্ঞাস্য ছিল, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল তাদের মধ্যে থেকে প্রধানতম। এ এক এমন ধাঁধার নাম যা বছরের পর বছর ধরে মানুষকে বিস্ময়ে রেখে দিয়েছিল। হাজারো চেষ্টা করেও এর রহস্য সমাধান করতে পারছিলেন না কোন বিজ্ঞানীরা। মানুষ সর্বদা  জ্ঞানপিপাসু তাই অজানাকে জানতে আর নতুন কিছু প্রমাণের যে স্পৃহা তা সর্বদা বিজ্ঞানীদের মধ্যে পরিলক্ষিত হলেও তরুণ সমাজে আমাদের কাছে তা সর্বদাই আকর্ষণীয় একটা বিষয় হয়ে থাকে।তবে সম্ভবত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যভেদে শেষপর্যন্ত সূত্র পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। 
৫ লক্ষ বর্গ কিমি এই এলাকা জুড়ে বারমুডা, ফ্লোরিডা ও পুয়ের্তো রিকোকে ঘিরে ত্রিভূজ আকৃতির বলয় তৈরি করেছে।

একটি ধারণা সবার মধ্যে প্রচলিত আছে যে, বহিঃবিশ্বের কোনো অজানা প্রাণীর বাস সেখানে, যারা সর্বদা বসে আছে আশেপাশের সবকিছু গ্রাস করে নেবার জন্য। ধারণামতে ভিনগ্রহের মানুষেরা পৃথিবীতে এসে এ স্থানটিকে তাদের ঘাঁটি বানিয়ে নেয় এবং এ অঞ্চলের ভিতরে প্রবেশকারী সকল কিছুর চিহ্ন তারা গায়েব করে দেয় যাতে কেউ তাদের ব্যাপারে কিছুই জানতে না পারে। মজার বিষয় হিসেবে এই জায়গাকে তুলনা করা যেতে পারে ব্ল্যাকহোলের সাথে। যেখানে একবার কেউ প্রবেশ করলে বের হওয়া তো দূরের কথা তার কোনো অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যায় না।

যেখানে পৌঁছালে চলন্ত জাহাজ ও উড়োজাহাজ যাত্রীসহ উধাও হয়ে যায়
Bermuda Triangle-http://www.topbanglapages.com/

যদিও আজ অব্দি অনেক গবেষণা হয়েছে এই ট্রায়াঙ্গল সম্পর্কে, তারপরও সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানীদের থেকে উঠে এসেছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য। তারা বর্ণনা করেছেন যে সমুদ্রের এ জায়গায় ষড়যন্ত্র মেঘ  এর কারণে এক বায়ু গোলার সৃষ্টি হয় যার কারনে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়, যার কারনে আশেপাশের সবকিছু এই বিশাল ঢেউ সহ্য করতে না পেরে মিলিয়ে যায় আটলান্টিক সমুদ্রের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর অতল গহ্বরে। এই গবেষণাটিকেই আজ পর্যন্ত সমস্ত গবেষণার ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যায় সামনে নতুন কিছু কংক্রিট গবেষণার মাধ্যমে বের হয়ে আসবে নতুন আরো অজানা রহস্য, যার ফলশ্রুতিতে বাঁচানো যাবে অসংখ্য নিরীহ প্রাণ।

এই অঞ্চলের রহস্যের মূল কারণ হল এখানে কোনও জাহাজ বা বিমান একবার প্রবেশ করার পরই তার বেতার যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, দিক নির্দেশক কম্পাস ভুল দিক নির্দেশ করতে থাকে। একসময় জাহাজটি বা উড়োজাহাজটি অদৃশ্য হয়ে যায়। যে জাহাজ বা বিমান একবার এর মধ্যে ঢুকেছে, তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এসবই যুগের পর যুগ ধরে মিথ হয়ে রয়েছে এই রহস্যময় অঞ্চলকে ঘিরে।

যেখানে পৌঁছালে চলন্ত জাহাজ ও উড়োজাহাজ যাত্রীসহ উধাও হয়ে যায়
Bermuda Triangle-http://www.topbanglapages.com/

আর তাই একে ঘিরে তৈরি হয়েছে একেরপর এক গল্প। কখনও শত্রুপক্ষের আক্রমণের গল্প করা হয়েছে, আবার কখনও এমনকী ভিনগ্রহের বাসিন্দাদেরও এই ঘটনার নেপথ্যে থাকার জন্য দায়ী করা হয়েছে।তবে সমাধান সম্ভবত পেয়ে গিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেলে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, চূড়ান্ত আবহাওয়ার কারণে এই অঞ্চলে ষড়ভূজ মেঘের উৎপত্তি ও গঠনই জাহাজ ও বিমানের গায়েব হওয়ার পিছনে দায়ী।

বলা হচ্ছে, এই অঞ্চলে এই ষড়ভূজী মেঘ এমনভাবে জমাট বাঁধছে যে তার ফলে 'বায়ুবোমা' তৈরি হচ্ছে। যার ফলে বাতাসের গতি বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৭০ মাইল বা ২৭৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। যার ক্ষমতা রয়েছে জলে ভাসা বড় জাহাজ অথবা আকাশে ওড়া বিমানকে সমুদ্রের বুকে আছড়ে ফেলার।এই ধরনের বায়ুর গোলা সমুদ্রের উপরে আছড়ে পড়ে বিস্ফোরণ করে, ফলে তুমুল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয় যা এই অঞ্চলকে অশান্ত করে তোলে, এমনটাই জানানো হয়েছে রিপোর্টে।তবে এই ধরনের রিপোর্ট কিছু নতুন নয়। এর আগেও বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে অনেক রিপোর্ট বেরিয়েছে। এই ঘটনাই আসল কারণ কিনা সেটা আরও ভবিষ্যতে যাচাইয়ের পরই বোঝা যাবে।

সর্বপ্রথম এই জায়গার আবিষ্কার করেন আমেরিকার উদ্ভাবক কলম্বাস। তার বর্ণনামতে, তার জাহাজের নাবিকেরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল পাড়ি দেবার সময় দেখেছিল আলোর নাচানাচি আর আকাশে ধোঁয়া। এছাড়া কলম্বাস আরো লিখেছেন যে এই জায়গায় এসে তার কম্পাসও ভুল নির্দেশনা দিচ্ছিলো। আজ পর্যন্ত অসংখ্য জাহাজ এবং উড়োজাহাজ হারিয়ে গেছে এই ট্রায়াঙ্গলে যার কোনো চিহ্ন আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় এ পর্যন্ত ৫০টি বাণিজ্যিক জাহাজ ও ২০ টি বিমান হারিয়ে গেছে এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে।





শেয়ার করুন

Author:

আমি একজন অতি সামান্য মানুষ। পেশায় একজন লেখক,ব্লগার এবং ইউটিউবার। লেখালেখি করতে খুব ভালো লাগে। আমার এই সামান্য প্রয়াসের মাধ্যমে মানুষের কিছু শেখাতে পারা ও বিনোদন দেওয়ার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পায়।

0 coment rios: