কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন প্রযুক্তি আসক্তি।
মানুষ দিনে গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ বার মুঠোফোন দেখেন। হয় কল করেন, ওয়েব ব্রাউজ করেন, ফেসবুকে কিছু পোস্ট করেন,ইউটিউব দেখেন,কিংবা শুধুই অভ্যাসের বশে পকেট থেকে বের করে সময় দেখে, আবার কেউ কেউ বিনা কারণে হাতের মুঠোয় ফোন রেখে দেন।আসলে মুঠোফোন ব্যবহার করা টা এখন মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় আসক্তি। এই আসক্তি মানুষের বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি করে থাকে। আজ আপনাদের এমন কিছু মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেব যারা প্রযুক্তির ও মুঠোফোনের উপর অনেকটা আসক্তি ছিল। কিন্তু তারা সেই আসক্তি কাটিয়ে উঠেছেন। তেমন পাঁচজন মানুষের অভিজ্ঞতা তুলে ধরব। আপনারা যদি এই টিপস গুলো মানেন তাহলে আপনাদের অনেকটা উপকার হতে পারে ।
technology picture-http://www.topbanglapages.com/ |
জ্যাক ন্যাপঃ
২০১২ সালের দিকে গুগল ভেঞ্চারের সাবেক ডিজাইন পার্টনার জ্যাক ন্যাপের আইফোন ব্যবহারের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এতটাই বেশি ব্যবহার করতে থাকেন যে তার শিশুসন্তানদের সময় দিতে পারছিলেন না। এদিকে মুঠোফোন ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব নয়।তখন তিনি ভেবে দেখলেন যে তিনি সবচেয়ে টুইটার, ফেসবুক,ইউটিউবের এপগুলোতেই বেশি সময় নষ্ট করছেন। তাই তিনি অন্য কোন চিন্তা না করে এপগুলো মুছে ফেলেন। নিজেকে পরীক্ষার জন্য নেওয়া সে পদক্ষেপ ৬ বছর ধরেও তিনি সেই এপগুলো আর ওপেন করেননি।
মিশেল জাপ্পাঃ
নিজের স্মার্টফোন আসক্তি সম্পর্কে সতর্ক করতে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছিলেন এনভিশ্নিং টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা মিশেল জাপ্পা।তিনি আইফোনের পরিবর্তে ব্যবহার শুরু করেন আইপ্যাড মিনি।এতে আইফোনের সব সুবিধা আছে, শুধু কল করা যায় না। তবে আকারে বড় হওয়াই আইফোনের মত স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারতেন না। যখনই হাতে আইপ্যাড তুলে নিতেন , তার মনে হত যে সময় নষ্ট করছেন।খুব দরকার না পড়লে ট্যাব ব্যবহার করা বন্ধ করে দেন। পরে ট্যাব ছেড়ে আইফোনে ফিরে গিয়েছিলেন, তবে মুঠোফোন ব্যবহারের সচেতনতা বেড়ে গিয়েছিল অনেক।
সারাহ লরেন্সঃ
গ্রাফিক ডিজাইনার সারাহ লরেন্সের মতে, প্রথম পদক্ষেপ হল মোমেন্ট এর মত এপ ইন্সটল করা। স্বাভাবিকের চেয়ে স্মার্টফোন বেশি ব্যবহার শুরু করলেই এই এপ ব্যবহার কারীদের মনে করিয়ে দেয়। একই সঙ্গে দিনে কতবার ফোন ব্যবহার করছেন তাও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে। নিজের উপর পরিক্ষা চালান সারাহ লরেন্স। দুই সপ্তাহ স্বাভাবিক রঙ্গে এবং পরের দুই সপ্তাহ ফোনের পর্দা সাদা কালো করে ব্যবহার শুরু করেন। তিনি দেখলেন, পর্দা সাদাকালো রাখলে অযথাই যখন তখন মুঠোফোনের ব্যবহার কমে যায়।
ইয়নি রেখটম্যানঃ
এক থেরাপিস্টের পরামর্শ মেনে কোন ঘরে ঢোকার আগে মুঠোফোন আরেক ঘরে ফেলে আসা শুরু করেন ইয়নি রেখটম্যান নামের বিখ্যাত বিনিয়োগকারী। মূলত ফোন থেকে দূরে থাকাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। প্রথমে হয়ত ২০ মিনিটের জন্য, পরে সময়টা ধীরে ধীরে বাড়াতে বলেন তার থেরাপিস্ট। ইয়নি রেখটম্যান বলেন আমি পুরোপুরি এই কাজটি রপ্ত করতে পারিনি, তবে আগের চেয়ে অনেক ভালো আছি।
জন কনভারস টাউনসেন্ডঃ
সপ্তাহ কয়েকের জন্য ইন্সটাগ্রাম অ্যাপ মুছে ফেলেন ফাস্ট কোম্পানির সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার
জন কনভারস টাউনসেন্ড। একই সঙ্গে প্রতি রাতে স্মার্টফোনের এয়ারপ্লেন মোড চালু করে রাখতে শুরু করেন।তবে এখনও স্মার্টফোনের এয়ারপ্লেন মোড চালু করে রাখতে ভোলেন না। এতে অন্তত ঘুমের ব্যাঘাত বন্ধ হয়ে যায়।
technology picture-http://www.topbanglapages.com/ |
প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা ও আপনার করণীয়ঃ
- আপনি স্মার্টফোন ব্যবহার করলেও সবসময় খেয়াল রাখবেন বাজে কোন কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন না।
- আপনি যেই এপ্সের মধ্যেই যান না কেন খেয়াল রাখবেন সেখান থেকে কোন কিছু শিখে আসতে। যেটা আপনার ভবিষ্যতে কাজে লাগে।
- আপনি স্মার্টফোনে ফেসবুকিং,ইউটিউবে অযথা বাজে ভিডিও না দেখে কোন শিক্ষণীয় ভিডিও দেখুন।এমনকি আপনি বাজে সময় নষ্ট না করে আউটসোর্সসিং শিখতে পারেন তাতে আপনার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।
- মোবাইল ফোনে বাজে মেয়েদের সাথে কথা বলা বন্ধ করুন বরং বিভিন্ন ব্লগ অথবা শিক্ষণীয় এপ্স ইন্সটল করে সেগুলো পড়ুন তাতে আপনি অনেক কিছু জানতেও পারবেন এমনকি ভাল কিছু শিখতে পারবেন।
0 coment rios: