শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৯

মানসিক অবসাদ ও ক্লান্তি লাগার কারণ এবং দূরীকরণের উপায়

মানসিক অবসাদ ও ক্লান্তি লাগার কারণ এবং দূরীকরণের উপায়ঃ


মানসিক অবসাদ ও ক্লান্তি লাগার কারণ এবং দূরীকরণের উপায়


ক্লান্তি লাগার কারণ ঃ

সারা দিন ক্লান্ত লাগে,অবসন্ন লাগে,কেন কাজ করতে মন চায় না? সারাক্ষণ মনে হয় বিশ্রাম নিই। শরীর ব্যথা করে,ম্যাজম্যাজ করে,সবসময় ঘুম ঘুম ভাব ধরে।আজকাল সব রোগীরা এই ধরণের সমস্যার কথা বলেন। আদিম যুগে মানুষ শিকারি ছিল,বৈরি পরিস্থিতির সংগে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হত। তখন তাকে সাহায্য করত নানা স্ট্রেস হরমোন,যেমন কর্টিসল,এপিনেফ্রিন ইত্যাদি।বর্তমানে মানুষের স্ট্রেস বা মানসিক চাপের ধরণ একেবারেই আলাদা। এখনো প্রচুর স্ট্রেস হরমোন তৈরি হয় তবে তা আগের যুগের মানুষের যেমন খরচ হতো এখন তেমন খরচ হয় না বললেই চলে। এই স্ট্রেস হরমোনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে আমাদের রক্তে শর্করা, রক্তচাপ বাড়ে,হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে,অবসাদ বাড়ে, বিষণ্ণতা বাড়ে, এমনকি ওজনও বাড়ে। এই সকল কারণেই ক্লান্তি শরীরে ক্লান্তি অনুভব হয়।

দূরীকরণের উপায়ঃ 

স্ট্রেস হরমোনের এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে হলে মানসিক চাপ কমাতে হবে। নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে হবে, বসে না থেকে পরিশ্রম করতে হবে, সঠিক সময়ে খাবার খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত ঘুম দিতে হবে।এছাড়াও মানবসেবায় নিয়জিত হওয়া, গাছপালা ও পশুপাখির পরিচর্যা করা, পরিবার ও বন্ধবান্ধবের সাথে আনন্দময় সময় কাটানো, মাঝে মধ্যে দূরে ঘুরতে বের হওয়া এই সকল কাজ কর্ম করলে মানসিক স্ট্রেস কমে যাবে।ভাবছেন সারাদিন এত পরিশ্রম করি, তারপর আবার ব্যায়াম করার সময় পাব কখন বা পরিশ্রম করলে আবার কি ব্যায়ামের প্রয়োজন হয়? আসলে এই নিত্য দিনের এক ঘেয়েমি কাজে স্ট্রেস হরমোনের খরচ হয় না বরং ক্লান্তি আরও বাড়ে।

স্ট্রেস হরমোন কমানোর জন্য সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন ৪০ মিনিট করে হাটতে হবে।যাতে করে হৃদস্পন্দন বাড়ে,রক্ত চলাচল বাড়ে। যতই কাজ থাকুক না কেন রাতে ৫-৬ ঘণ্টা অবশ্যই ঘুমাতে হবে। ঘুমের সময় ফেসবুক,ইন্টারনেট,টিভি দেখা,গান শোনা ইত্যাদি অভ্যাস পরিহার করতে হবে। থাইরয়েড হরমোন,সেক্স হরমোন, ভিটামিন ডি কমে গেলে অনেকসময় ক্লান্তি ও অবসাদ বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস থাকলে ক্লান্তি আসবেই এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। আপনাকে অবশ্যই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

ক্লান্তি ও অবসাদ কমাতে হলে প্রথমেই আপনার হতে হবে এই ব্যাপারে সচেতন। বিভিন্ন খাবারের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে এবং নিয়ম করে খাবার খেতে হবে। ক্যালরি ও প্রয়োজনীয় ভিটামিনের মাত্রা বুঝে খাদ্য গ্রহণ করুন। জাঙ্ক ফুড,কমল পানীয়, ভাজা পুঁড়া খাবার একদম পরিহার করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করে স্ট্রেস হরমোন কমিয়ে ফেলুন। ঘুমের ব্যাপারে কোন আপোষ নেই, রাতের বেলায় আমাদের ঘুম ধরলেও এটা সেটা করে দেরি করে ফেলি কখনই এটা করা যাবে না। ঘুম ধরলেই সাথে সাথে ঘুমাতে যেতে হবে।কারণ প্রতিদিন ঘুম একিই সময় আসে না এটা অনেকটা পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে।সবসময় স্বাস্থ্যকর ও আনন্দময় জীবনযাপনের জন্য চেষ্টা করুন। এরপরও যদি ক্লান্তি দূর না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। 

শেয়ার করুন

Author:

আমি একজন অতি সামান্য মানুষ। পেশায় একজন লেখক,ব্লগার এবং ইউটিউবার। লেখালেখি করতে খুব ভালো লাগে। আমার এই সামান্য প্রয়াসের মাধ্যমে মানুষের কিছু শেখাতে পারা ও বিনোদন দেওয়ার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পায়।

0 coment rios: