বিবাহিত জীবনে সুখে থাকার উপায়গুলো কী কী?
বিবাহিত জীবনে সুখী হওয়া বা সুখে থাকার অনেকগুলি উপায় আছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো স্বামী আর স্ত্রী একটা জটিল বন্ধন। যে বন্ধনে রয়েছে নানান চড়াই উৎরাই একিই ছাদের নিচে থাকলে কমবেশি পাদফুসুড়ি হয় আর কি? এবার আমি সিরিয়াসলি উত্তর দিচ্ছি । একজনেরও যদি উপকার করতে পারি তাহলে আমার লেখাটা সার্থক হবে। তাই বলে আমি যে মহাসুখে অট্টালিকার পরে আছি সেটা ভাবারও কোন কারণ নেই। স্ত্রীদের সুখী করা অনেক কঠিন। মোটের উপর ছোট খাট কোন বিষয় হলেই স্ত্রীদের মুখের দিকে তাকানো যায় না। মনে হয় ওর মুখে কেউ বোম মেরেছে। আজকে বিবাহিত জীবনে সুখে থাকার উপায়গুলো আলোচনা করব।
আমি এখানে সাধারণ দম্পতিদের কথা বলবো। মারকুটে স্বামী বা ভীষণ ঝগড়ুটে স্ত্রীর কথা বলব না। ওদের সাইকিয়াট্রিক দেখানোর আবেদন করব।
দাম্পত্য জীবনে সুখে থাকার উপায়গুলো নিচে আলোকপাত করা হলোঃ
- বিয়ের পর স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ভালবাসা থাকতে হবে। মূল ভিতটাই যদি তৈরী না হয় তাহলে নীচের পয়েন্টগুলোর কোনরকম অর্থ থাকবে না।
- দুজন দুজনের ভরসার পাত্র হবে। এটুকু বিশ্বাস থাকবে যে কঠিন সময়ে ভরসা করা যাবে।একে অপরের সবসময় পাশে থাকবে।
- পারস্পরিক শ্রদ্ধা রাখা খুব জরুরী । সঙ্গীকে তাচ্ছিল্য করা মানে নিজেকেই ছোট করা।কাজেই কেউ কাউকে কখনও ছোট করবে না।
- যে ব্যবহারে আমি দুঃখ পাবো সেই ব্যবহার স্বামী/ স্ত্রী / শ্বশুরবাড়ির সাথে না করা।
- দুজনের মধ্যে কাউকেই উচ্চ আসনে বসানো ঠিক না। এই দাম্পত্য জীবনে দুজনই সমান সমান ভাগীদার। একজন ছাড়া আরেকজনের যখন চলবে না তখন উচ্চ নীচের মানে কি ? দুজন সমান আসনে বসবে।
- সেক্রিফাইস শব্দটা দাম্পত্য জীবনের অভিধানে থাকতে নেই। ত্যাগ নয় বরং ভালবেসে মানিয়ে নেওয়া কথাটা বেশী সুন্দর । আমরা বাইরে এত এত লোককে মানিয়ে নিচ্ছি আর ঘরের এবং সবচেয়ে কাছের ভালবাসার মানুষের সাথে মানিয়ে নিতে পারব না ? নিশ্চয়ই পারব।
- স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া স্বাস্থ্যকর। এটাতে বোঝা যায় যে দুজন দুজনকে কেয়ার করে। ঝগড়া না করা মানে একজনের ভালমন্দে আরেকজনের কিছু যায় আসে না। মান অভিমান থাকা আরো ভালো এতে প্রেমের গভীরতা বাড়ে।
- যে পরিবারে ছেলেমেয়েরা নিজেদের মা বাবাকে সম্মানের চোখে দেখে সেই পরিবার স্বর্গ থেকে কিছু কম নয়। তাই সন্তানের কান ভাঙানি বন্ধ করতে হবে। মায়ের বিরুদ্ধে বা বাবার বিরুদ্ধে কোন কথা ওদেরকে বলবেন না। অনেক পরিবারে অশান্তির মূল কারণ এটাই হয়।
- দোষারোপ বন্ধ করুন। এটা মারাত্মক ব্যাধি।
- বিবাহ বহির্ভূত কোনো সম্পর্কে জড়াবেন না। স্বামী- স্ত্রীর সম্পর্ক ভীষণ নরম, তুলতুলে । একবার ক্ষত হলে সারে না…বরং চরম ক্ষতের সৃষ্টি হয় যা আর কোন মলমেই সারে না।
- দুজনে একা সময় কাটানো একটা খুব ভালো উপায়। হাতে মোবাইল, বই কিচ্ছু থাকবে না। শুধু দুজনে কথা বলুন। সুখ দুঃখ , রাগ, অভিমান ইত্যাদি যা আছে সব শেয়ার করুন। এবং ওখানেই ব্যাপারটা শেষ করুন… লম্বা টানবেন না
দাম্পত্য জীবনে সুখে থাকার ৮টি কৌশলঃ
- সংসার সুখের করতে হলে পুরুষদের কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। আপনি যদি এই কৌশল গুলো অবলম্বন করতে পারেন তাহলে আপনার বউয়ের মুখ ঝামটা দেখতে হবে না বরং আপনার বউ উল্টো আপনার মুখ ঝামটা সহ্য করবে।
- সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে। আমার স্ত্রী একটা সুন্দরী রমণী এই কথা সকাল, বিকাল, সন্ধ্যা এমনকি টয়লেটে বসে বসে বলতে থাকবেন।
- রান্না যত খারাপ হোক না কেন প্রশংসা করবে। এভাবে বলবে লক্ষ্মীটি এত সুন্দর রান্না তুমি কবে থেকে শিখলে বেশ মজা হয়েছে। এই জন্যই তো আমি বাইরের খাবার মোটেই খায় না।অথচ আপনি বাইরে থেকে পেট গলা অব্দি ভরে আসেন। এইটুক পাম দিতেই হবে।
- সবসময় বউয়ের মা বাবার প্রশংসা করবেন। এভাবে বলবেন আমার শ্বশুর শাশুড়ির মত মানুষ এই জগতে আর পাওয়া যায় না। সারাদিন অফিস শেষে বাড়ি এসে আগে জিজ্ঞাসা করবে আমার শ্বশুর শাশুড়ি কেমন আছে। তুমি তাদের খোঁজ খবর নিয়েছ। দেখবে বউ উল্টো বাবা মায়ের কাছ থেকে জিনিস হাতিয়ে নিয়ে আসবে।
- বেশি বেশি পাম মারা শেখ। এমনভাবে বলবে যাতে মনে হয় সত্যি সত্যি বলছো। দাঁতের ফাঁক দিয়ে হাসি বেরিয়ে না আসে খেয়াল রাখবে। যদি খুব হাসি পায় তাহলে বাথরুমে যাওয়ার নাম দিয়ে মুখ চেপে ধরে টয়লেট থেকে হেসে আসবে।
- বউ যদি আবদার করে তাহলে কখনই বলবে না আমি কিনে দিতে পারবো না বরং এভাবে বলবে তুমি আমার একটা মাত্র বউ তোমার আবদার আমি কি ফেলতে পারি।হাতে টাকা আসলেই কিনে দেব। এভাবে পার করে দিবে দেখবে কিছুদিন পর ঐ জিনিসের উপর আর কোন ইচ্ছা থাকবে না। কিন্তু মুখের উপর না বলে দিলে তোমার পুটকি মারা শেষ হয়ে যাবে।
- মাঝে মধ্যে ঘুরতে নিয়ে যাবে বাইরের কিছু খাবার খাওয়াবে এটা খুব ভাল উপকার দেয়।
- তুমি এমন ভাব করবে যেন বউ ছাড়া তুমি পুরোটাই অচল। তাহলে দেখবে তোমার বউ তোমার প্রশংসায় পঞ্চমুখর হবে।
উপরের এই সকল রুলস যদি আপনি অনুসরণ করতে পারেন তাহলে আপনার ঘরে সুখের বাতি দাও দাও করে জ্বলতে থাকবে। তখন আপনার মনে হবে সুখের বাতি নিভিয়ে সকল কাজ ফেলে রেখে কাম করি। হি হি হি হা হা হা হু হু হু।
লেখক মোঃ সাজেদুর রহমান।
0 coment rios: