গরুর মাংশ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা বা করণীয়।
আমরা কি আদৌ স্বাস্থ্যকর গরুর গোশত খায়? মনে হয় কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবে না যে সে স্বাস্থ্যকর গরুর মাংশ খায়। কারণ যখন আমাদের মাংশ খাওয়ার প্রয়োজন হয় তখন আমরা বাজার থেকে মাংশ ক্রয় করে নিয়ে আসি।কিন্তু এই ধরণের মাংশ খাইলে আমাদের স্বাস্থ্যের চরম ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন থাকে তাহলে আমরা কি করব মাংশ খাওয়ার জন্য কি আমাদের আস্ত গরু জবাই দিতে হবে। না ভাই সেটাও সম্ভব না কারো একার পক্ষে আস্ত গরু জবাই দিয়ে মাংশ খাওয়া সম্ভবপর নয়। কিন্তু আপনি যদি মাংশ ক্রয়ের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করেন সেক্ষেত্রে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক কম।আর কিছু বিষয় জানা থাকলে স্বাস্থ্যকর গরু বা খাসির মাংশ আপনি খেতে পারবেন। তাহলে আসুন আজকে জানব কিভাবে স্বাস্থ্যকর গরুর মাংশ আমরা বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসবো।গরুর মাংশ খাওয়ার ক্ষেত্রে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করব। এছাড়াও আলোচনা করবো স্বাস্থ্যকর গরুর মাংশ চেনার উপায় ও গরুর মাংশ রান্নার স্বাস্থ্যকর উপায়।
স্বাস্থ্যকর গরুর মাংশ চেনার উপায়ঃ
- বেশি চর্বিযুক্ত মাংশ ক্রয় করা যাবে না। কারণ চর্বিযুক্ত মাংশ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
- গরুর পেছনের পায়ের ওপরের অংশ ও পিঠের মাংসে আমিষ বেশি কিন্তু চর্বি কম।কাজেই এই সব জায়গার মাংশ কিনতে হবে।
- আবার কুঁজ, গলা ও সিনার মাংসে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে কাজেই এই সকল জায়গার মাংশ কিনবেন না। অনেকেই সিনার হাড়ের মাংশ পছন্দ করে।
- মগজ, পায়া, নেহারি, হাড়ের মজ্জা ইত্যাদিতে চর্বির মাত্রা অনেক বেশি তাই এই ধরণের মাংশ কিনবেন না।
- লিন মাংশ খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রতি ৩ আউন্স মাংসে যদি চর্বির পরিমাণ ১০ গ্রামের কম থাকে তবে সেই মাংসকে লিন মাংশ বলে। পিঠ, দাবনা ও পেছনের পায়ের মাংসে লিন আছে।কাজেই এইসকল স্থান থেকে মাংশ কিনতে হবে।
- পরিচিত মানুষের কাছ থেকে গরুর মাংশ কিনুন।তবে পরিচিত ভেবে আপনি খেয়াল না করেই মাংশ নিয়ে আসবেন না। কসাইকে বলে দিবেন আমার অমুক অমুক জায়গা থেকে মাংশ দেন। এক দোকান থেকে নিয়মিত মাংশ নিলে পরিচিত হওয়ার খাতিরে সে আপনার কথা রাখবে।
- মাংশ কাটার কাছে অনেকটা ভালো মন্দ বিরাজ করে। তাই ভালো কসাইয়ের কাছ থেকে মাংশ কিনবেন। যে মাংশ ভালো করে কাটতে পারে।
গরুর মাংশ রান্নার স্বাস্থ্যকর উপায়ঃ
- গরুর মাংস রান্নার আগেই মাংসের সঙ্গে লেগে থাকা সাদা চর্বির আস্তরণ ধারালো বঁটি দিয়ে কেটে বাদ দিন।
- যতটা সম্ভব মাংশ ছোট ছোট টুকরা করে কাটুন। এতে ভেতরকার চর্বি সহজেই বের হয়ে আসে এবং পরে ফেলে দেওয়া যায়।
- মাংস কাটার পর রান্নার আগে ছোট টুকরাগুলো গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন তাহলে জীবাণুমুক্ত হবে।
- ভুনাজাতীয় রান্না এড়িয়ে চলুন। চর্বি বা তেল ঝোলের সঙ্গে মিশে যায়, এটি অস্বাস্থ্যকর এভাবে রান্না করে খাবেন না।
- মাংসের ঝোল রান্না করলে ঠান্ডা হওয়ার পর ওপরে যে হলুদ চর্বির আস্তরণ পড়ে, তা চামচ দিয়ে তুলে ফেলে দিতে পারেন।
- মাংস রান্নায় তেল বেশি ব্যবহার না করে সিরকা বা টক দই দিয়ে মেরিনেট করে নিতে পারেন। অল্প তেল ব্রাশ করে, ওলিভ ওয়েল বা সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করে রান্না করা অধিক স্বাস্থ্যকর।
- মাংসের নানান মশলা বা গুরুপাক, বিট লবণ, টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করলে তা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগী বা কিডনি জটিলতার রোগীদের জন্য আরও ক্ষতির কারণ হতে পারে।তাই রান্নায় সিরকা, টক দই, লেবুর রস, কাঁচা পেঁপে, বাটা গোলমরিচ ব্যবহার করতে পারেন।তবে চেষ্টা করবেন তেলের পরিমাণ ঠিক রাখতে।
সবশেষে বলবো গরুর মাংশ বেশি খাওয়া পরিহার করুন সপ্তাহে একবার দুইবার খেতে পারেন। মাসে.৪-৬ দিনের বেশি না খাওয়াই ভাল।বেশি বেশি শাকসবজি ও তরিতরকারি খাবেন। সবার দীর্ঘায়ু কামনা করি আর আমার জন্য সকলেই দোয়া করবেন।"আমিন"
টাগঃ গরুর মাংশ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা বা করণীয়, স্বাস্থ্যকর গরুর মাংশ চেনার উপায়, গরুর মাংশ রান্নার স্বাস্থ্যকর উপায়, গরুর মাংস খাওয়ার স্বাস্থ্যকর উপায়,গরুর মাংসের অপকারিতা,গরুর সিনার মাংস,গরুর মাংসের রেসিপি
0 coment rios: