বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন গুনি চলচ্চিত্র পরিচালক রয়েছেন।তাদের মধ্যে থেকে সেরা ১০ জন বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালক নিয়ে আলোচনা করবো। তাঁরা ছিলেন একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, লেখক এবং গীতিকার। আজ আমি দেশের সেরা ১০ জন বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালকদের তালিকা ও তাদের নির্মিত ব্যবসা সফল সিনেমাগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
সেরা ১০ জন বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালকঃ
১ জহির রায়হানঃ
সেরা ১০ জন বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালকঃ
- ১। জহির রায়হান
- ২। চাষী নজরুল ইসলাম
- ৩। তারেক মাসুদ
- ৪। এ জে মিন্টু
- ৫। আজিজুর রহমান
- ৬। শহীদুল ইসলাম খোকন
- ৭। মনতাজুর রহমান আকবর
- ৮। এফ আই মানিক
- ৯। কাজী হায়াৎ
- ১০। সোহানুর রহমান সোহান
১ জহির রায়হানঃ
জহির রায়হান ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট বর্তমান ফেনী জেলার সোনাগাজি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক, এবং গল্পকার। বাংলা সাহিত্যের গল্প শাখায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার জহির রায়হানকে ১৯৭৭ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক এবং সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯২ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। চলচ্চিত্রে তার সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৭৫ সালে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে মরণোত্তর বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
জহির রায়হান রচিত প্রথম উপন্যাস শেষ বিকেলের মেয়ে ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয়। তার রচিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হলো হাজার বছর ধরে ও আরেক ফাল্গুন। হাজার বছর ধরে উপন্যাসের জন্য ১৯৬৪ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন। তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র কখনো আসেনি (১৯৬১) মুক্তি পাই । ১৯৬৪ সালে কাঁচের দেয়াল চলচ্চিত্রের জন্য তিনি নিগার পুরস্কার অর্জন করেন। তার নির্মিত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলো হলো বেহুলা, সঙ্গম, আনোয়ারা এবং জীবন থেকে নেওয়া। স্টপ জেনোসাইড প্রামাণ্যচিত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে তিনি বেশ প্রশংসিত হন। এই মহান চলচ্চিত্রকর ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২ পাকিস্তানি হানাদারের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন।
২ চাষী নজরুল ইসলামঃ
চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৪১ সালের ২৩ অক্টোবর বিক্রমপুর শ্রীনগর থানার সমষপুর গ্রামে চাষী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি ১৯৬১ সালে তখনকার খ্যাতিমান পরিচালক ফতেহ লোহানীর সাথে 'আসিয়া' চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি ১৯৬৩ সালে প্রখ্যাত সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকার ওবায়েদ উল হকের সহকারী হিসাবে 'দুইদিগন্ত' চলচ্চিত্রে কাজ করেন । ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনিই প্রথম নির্মাণ করেন মুক্তিযুদ্ধভিক্তিক চলচ্চিত্র 'ওরা ১১ জন'। এই চলচ্চিত্রটি ১৯৭২-এ মুক্তি পাওয়ার মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে চাষী নজরুলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। তার বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র রয়েছে সেগুলো হলো রামের সুমতি, শুভ দা, বেহুলা লখিন্দর, লেডি স্মাগলার, আজকের প্রতিবাদ, দাঙ্গা ফ্যাসাদ এর মতো অনেক চলচ্চিত্র তৈরি করে সুনাম কুড়িয়েছেন এই পরিচালক। এই মহান চলচ্চিত্র পরিচালক ১১ জানুয়ারি ২০১৫ সালে না ফেরার দেশে চলে যান।
৩ তারেক মাসুদঃ
তারেক মাসুদ ১৯৫৬ সালে ৬ ডিসেম্বর তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন বাংলাদেশী স্বাধীন চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, লেখক এবং গীতিকার। মাটির ময়না (২০০২) তার প্রথম ফিচার চলচ্চিত্র যার জন্য তিনি ২০০২-এর কান চলচ্চিত্র উৎসবে ডিরেক্টরস ফোর্টনাইটসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন এবং এটি প্রথম বাংলাদেশী বাংলা চলচ্চিত্র হিসেবে সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র হিসেবে একাডেমি পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশী নিবেদন করা হয়েছিল।
তার পরিচালিত প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সোনার বেড়ি (১৯৮৫) এবং সর্বশেষ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রানওয়ে মুক্তি পায় ২০১০ সালে। চলচ্চিত্রে তার অবদানের জন্য ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০১৩ সালে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান,প্যাসিফিক, আমেরিকান ইন্সটিটিউট এবং দক্ষিণ এশিয়া সলিডারিটি ইনিশিয়েটিভ তার চলচ্চিত্রের প্রথম উত্তর আমেরিকান 'ফিরে দেখা' অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।১৩ আগস্ট ২০১১ মাত্র ৫৪ বছর বয়সে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
৪ এ জে মিন্টুঃ
বাঁধনহারা, চ্যালেঞ্জ, অশান্তি, লালু মাস্তান, সত্য মিত্থা, ন্যায় অন্যায়, পিতা মাতা সন্তান, বাংলার বধু, প্রথম প্রেম ও বাপের টাকা) মিন্টু হলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারে সর্বাধিক সংখ্যক পুরষ্কার প্রাপ্ত একমাত্র পুরুষ , নারীদের মধ্য হলেন সাবিনা ইয়াসমিন । এছাড়াও মিন্টু একজন সফল প্রযোজকও ছিলেন। মিন্টুর ছবি দেখতে সব শ্রেণীর দর্শক হলে হুমড়ি খেয়ে পড়তো। যিনি প্রতিটা দৃশ্য কে বাস্তবে ঘটে যাওয়া ঘটনার মতো উপস্থাপন করতেন যার কারন শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবেও একাধিকবার পুরষ্কার পেয়েছেন।এ জে মিন্টু হলেন একজন বাংলাদেশী পরিচালক। তিনি ৪ বার শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।
৫ আজিজুর রহমানঃ
আজিজুর রহমান ১৯৩৯ সালের ১০ অক্টোবর সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহরের কলসা সাঁতাহার মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম রুপচাঁন প্রামানিক। তিনি স্থানীয় আহসানুল্লাহ ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পাস ও ঢাকা সিটি নাইট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর তিনি চারুকলা আর্ট ইনস্টিটিউটে কমার্সিয়াল আর্টে ডিপ্লোমা করেন। আজিজুর রহমান একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক। পরিচালক এহতেশামের সহকারী হিসেবে তিনি চলচ্চিত্রে কর্মজীবন শুরু করেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র লোককাহিনী নির্ভর সাইফুল মুল্ক্ বদিউজ্জামাল (১৯৬৭)। তিনি অশিক্ষিত (১৯৭৮), মাটির ঘর (১৯৭৯), ছুটির ঘণ্টা (১৯৮০) চলচ্চিত্র পরিচালনা করে খ্যাতি অর্জন করেন।
৬ শহীদুল ইসলাম খোকনঃ
শহীদুল ইসলাম খোকন ১৫ মে, ১৯৫৭ সালে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) বরিশাল জেলার ইমামকাঠি অন্তর্গত বোয়ালিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক। পরিচালনার পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও অভিনয় করেছেন। মৌলিক গল্প, দুর্দান্ত অ্যাকশন, মিষ্টি মধুর গান আর টানটান উত্তেজনা ভরপুর চলচ্চিত্র নির্মাণে তিনি অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। শহীদুল ইসলাম খোকনের চলচ্চিত্র যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৪ সালে অভিনেতা ও প্রযোজক সোহেল রানার হাত ধরে। সোহেল রানা পরিচালিত মাসুদ রানা চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবে তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে পদার্পণ করেন।
তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র রক্তের বন্দী তেমন সাফল্য পায় নি। তার পরিচালিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটিও সাফল্যের মুখ দেখে নি। এরপর তিনি সোহেল রানার ছোট ভাই রুবেলকে নিয়ে নির্মাণ করেন অ্যাকশন নির্ভর 'লড়াকু' যা ব্যবসাসফল হয়। খোকন মানেই রুবেল এর কিছু অসাধারন অ্যাকশন আর ভিন্নধর্মী কোন গল্প। খোকন, আলম খান, রুবেল এই তিনজন ছিলেন ছবির তিন প্রধান কারিগর। লড়াকু, বীরপুরুষ, বজ্রমুসঠী , বিপ্লব, সন্ত্রাস, অপহরণ, সতর্ক শয়তান, বিসশপ্রেমিক, দুঃসাহস, গৃহযুদ্ধ ঘাতক, লম্পট, ভণ্ড, পাগলা ঘণ্টার মতো অনেক ব্যবসা সফল ছবির পরিচালক খোকন যার ছবির কাটতি ছিল সবসময়। ইলিয়াস কোবরা, ড্যানি সিডাক, সিরাজ পান্না, চিত্রনায়িকা মিশেলাদের নিয়ে মার্শাল আর্ট এবং অ্যাকশন ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করে তিনি সফলতা লাভ করেন। শহীদুল ইসলাম খোকন জয়া ইসলামকে বিয়ে করেন। তাদের ১ মেয়ে ও ২ ছেলে। শহীদুল ইসলাম খোকন ৪ এপ্রিল, ২০১৬ সালে না ফেরার দেশে চলে যায়।
৭ মনতাজুর রহমান আকবরঃ
মনতাজুর রহমান আকবর ৩১ জুলাই, ১৯৫৭ জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, সমাজকর্মী ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।তিনি মূলত বাংলা চলচ্চিত্রে মারপিঠধর্মী ও প্রণয়ধর্মী ঘরানার চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি নায়ক মান্না এর সাথে ২২ টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। এছাড়াও ডিপজলের সাথে ১৮ টি, লেখক আব্দুল্লাহ জহীর বাবু এর সাথে ৪৬ টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। এছাড়াও তার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ডিপজল, পপি, কেয়া, রিয়া সেন, শাকিবা, সংগীতা, অন্তরা বিশ্বাস, আকাশ খান এবং পুস্পি এই নতুন মুখ গুলোর ঢাকাই চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে।
তার পরিচালনায় সিনেমাগুলো হলো, ন্যায় যুদ্ধ,চাকর, প্রেম দিওয়ানা,টাকার পাহাড়,ডিসকো ডান্সার, বাবার আদেশ, বশিরা, বাঘিনী কন্যা, খলনায়ক, শয়তান মানুষ, কুলি,আমার মা,অন্ধ ভালোবাসা,শান্ত কেন মাস্তান,মনের মত,কে আমার বাবা,মগের মুল্লুক লাঠি,ভয়ংকর বিষু,আশা আমার আশা,গুন্ডা নাম্বার ওয়ান,মনে পরে তোমাকে,কুখ্যাত খুনী,ভয়ংকর সন্ত্রাসী,কঠিন বাস্তব, চেয়ারম্যান,রংবাজ বাদশা,ঢাকাইয়া মস্তান,ভয়ানক সংঘর্ষ, মেজর সাহেব, আরমান, মাস্তানের উপর মাস্তান, আঘাত পাল্টা আঘাত, বউয়ের সম্মান, বিগ বস,কঠিন সীমার,বাঁচাও,টপ সম্রাট,ভাইয়ের শত্রু ভাই,জীবনের গারান্টি নাই,বস্তির রানী সুরিয়া,ভন্ড নেতা,একশ্যান লেডি,ভয়ংকর রাজা,দুশমন খতম,কুখ্যাত নুরু,বাবার জন্য যুদ্ধ,তুমি আমার স্বামী,কাজের মানুষ,মায়ের চোখ,রিক্সাওয়ালার ছেলে,টপ হিরো,এভাবেই ভালোবাসা হয়,ছোট্ট সংসার,বাজারের কুলি,তবুও ভালোবাসি,আগে যদি জানতাম তুই হবি পর,মাই নেম ইজ সিমি,বোঝেনা সে বোঝেনা,দুলাভাই জিন্দাবাদ,মাই ডার্লিং ইত্যাদি।
৮ এফ আই মানিকঃ
এফ আই মানিক ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহন করেন। তিনি হলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার। তিনি মায়ের মতো ভাবী (২০০৮) চলচ্চিত্র নির্মাণ করে শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।[১] তার পরিচালিত ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রসমূহ হল স্বপ্নের বাসর (২০০১), পিতার আসন (২০০৬), দাদীমা (২০০৬), কোটি টাকার কাবিন (২০০৬), চাচ্চু (২০০৬), মাই নেম ইজ সুলতান (২০১২), জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার ২০১৩।
এফ আই মানিক নির্মিত আরও কিছু চলচ্চিত্রের তালিকাঃ
স্বপ্নের বাসর (২০০১),ভাইয়া (২০০২),লাল দরিয়া (২০০২),দুই বধূ এক স্বামী (২০০৩),মান্না ভাই (২০০৪),চাচ্চু (২০০৬),কোটি টাকার কাবিন (২০০৬),পিতার আসন (২০০৬),দাদীমা (২০০৬),মায়ের মতো ভাবী (২০০৮),যদি বউ সাজো গো (২০০৮),আমাদের ছোট সাহেব (২০০৮),বিয়ের লগ্ন (২০০৮),মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি (২০০৯),চিরদিন আমি তোমার (২০০৯),সবার উপরে তুমি (২০০৯),আমার ভাই আমার বোন (২০১০),আমার স্বপ্ন আমার সংসার (২০১০),এক জবান (২০১০),স্বামী ভাগ্য (২০১২),মাই নেম ইজ সুলতান (২০১২),জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার (২০১৩),দুই পৃথিবী (২০১৫)।
৯ কাজী হায়াৎঃ
কাজী হায়াৎ ১৯৪৭ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ জেলায় অবস্থিত কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের তারাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হলেন বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার এবং অভিনেতা। তিনি ১৯৭৪ সালে পরিচালক মমতাজ আলীর সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৭৬-১৯৭৭ মৌসুমে বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার আলমগীর কবিরের সাথে সীমানা পেরিয়ে ছবিতেও সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৭৯ সালে দি ফাদার ছবিটি পরিচালনার মধ্যে দিয়ে পূর্ণ-পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি তার বেশিরভাগ ছবিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সমসাময়িক জনদুর্ভোগের চিত্র ফুঁটিয়ে তোলেন।কাজী হায়াৎ তার চলচ্চিত্র জীবনে আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও অন্যান্য চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ সর্বমোট ৭৩টি চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি চারটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবে অংশগ্রহণ করেন। দাঙ্গা চলচ্চিত্রের জন্য আফ্রো-এশিয়ো সরিডরি কমিটি এ্যাওয়ার্ড কর্তৃক প্রদেয় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্র পরিচালনা এবং লেখনীর জন্য তিনি চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে নয়টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং লেখনীর জন্য তিনটি বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।
কাজী হায়াৎ অর্ধশতাধিক চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। তার পরিচালিত অন্যতম চলচ্চিত্রসমূহ হল দাঙ্গা (১৯৯২), ত্রাস (১৯৯২), চাঁদাবাজ (১৯৯৩), সিপাহী (১৯৯৪), দেশপ্রেমিক (১৯৯৪), লাভ স্টোরি: প্রেমের গল্প (১৯৯৫), আম্মাজান (১৯৯৯), ইতিহাস (২০০২), কাবুলিওয়ালা (২০০৬) এবং ওরা আমাকে ভাল হতে দিল না (২০১০)।
১০ সোহানুর রহমান সোহানঃ
সোহানুর রহমান সোহান হলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক। সোহান ১৯৭৭ সালে শিবলি সাদিকের সহকারী হিসেবে তার চলচ্চিত্র কর্মজীবন শুরু করেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র বিশ্বাস অবিশ্বাস (১৯৮৮)। তিনি মূলত প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র পরিচালনা করে থাকেন। তার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯৩), স্বজন (১৯৯৬), আমার ঘর আমার বেহেশত, অনন্ত ভালবাসা (১৯৯৯)। তিনি বর্তমানে ইউনিভার্সেল পারফর্মিং আর্টস ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো আমার দেশ আমার প্রেম, আমার ঘর আমার বেহেশত, অনন্ত ভালবাসা (১৯৯৯), স্বামী চিনতাই (২০০৪),আমার জান আমার প্রাণ (২০০৮),পরাণ যায় জ্বলিয়া রে (২০১০),কোটি টাকার প্রেম (২০১১), সে আমার মন কেড়েছে (২০১২),দ্য স্পিড (২০১২),লোভে পাপ পাপে মৃত্যু (২০১৪),ভাল লাগার চেয়েও একটু বেশি ইত্যাদি।
এক নজরে আরেকবার দেখুন, সেরা ১০ জন বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালক।
Sr No. | সেরা ১০ জন বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালক |
১ | জহির রায়হান |
২ | চাষী নজরুল ইসলাম |
৩ | তারেক মাসুদ |
৪ | এ জে মিন্টু |
৫ | আজিজুর রহমান |
৬ | শহীদুল ইসলাম খোকন |
৭ | মনতাজুর রহমান আকবর |
৮ | এফ আই মানিক |
৯ | কাজী হায়াৎ |
১০ | সোহানুর রহমান সোহান |
নিচের ভিডিও টির মাধ্যমে সেরা ১০ জন বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালকদের দেখুনঃ
0 coment rios: