কথায় আছে, আগে দর্শনধারী পরে গুণ বিচারি! খুব সম্ভবত এ প্রবচনটি আমাদের মাথায় এমনভাবে গেঁথে গিয়েছে যে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা শুধু দেখেই অনেক কিছু ভেবে ফেলি। এর রেশ ধরে জন্ম নেয় অনেক ভুল ধারণাও। যেমন মোটা নারীদের নিয়ে আমাদের সমাজে বেশ কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। হ্যাঁ, এমনকি সেসব ভুল ধারণা আছে আপনার মনেও! মোটা নারীরা আমাদের সমাজে এমনিতেই উপেক্ষিত, তার ওপরে এসব ভুল ধারণা তাঁদের জীবনকে করে তোলে আরো দুর্বিষহ। আসুন আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক মোটা নারীদের সম্পর্কে আমরা কি কি ভুল ধারণা পোষণ করে থাকি। তো দেরি না করে শুরু করা যাকঃ
আমরা সবাই মনে করি মোটা নারীদের যৌনজীবন সুখের হয় নাঃ
যৌনতা আমাদের সমাজে খুবই রাখঢাকের ব্যাপার হলেও এ নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। শেষ নেই এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনারও। এরই মাঝে একটা হলো মোটা নারীদের যৌনজীবন নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা। কোনো এক বিচিত্র কারণে প্রায় বেশির ভাগ মানুষেরই এই ধারণা যে, মোটা নারীদের যৌনজীবন সুখের হয় না। অথচ এটা একটা ভুল ধারণা। আর দশটা সাধারণ নারীদের মতোই তাঁদের যৌনজীবনও স্বাভাবিক ও সুখের হয়। এমনকি তাঁদের দাম্পত্যজীবনেও কোনো সমস্যা হয় না। বরং এক গবেষণায় দেখা গেছে চিকন নারীর থেকে মোটা নারীর যৌন জীবন সুখের হয় বেশি।
মোটা নারীদের বুদ্ধিও মোটা হয়ঃ
আমাদের সমাজে এই ধারণাটা একেবারেই বদ্ধমূল যে, মোটা নারীদের বুদ্ধি কম থাকে! অথচ বুদ্ধি মোটেও শারীরিক গঠনের উপর নির্ভরশীল নয়। একজন মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি তার মস্তিষ্কের গঠনের ওপর নির্ভরশীল। তাই মোটা নারীদের বুদ্ধিও মোটা হবে, এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ধারণা।
মোটা নারীরা বেশি খায়ঃ
অতিরিক্ত খাবার মানুষের মোটা হবার অন্যতম কারণ এটা সত্য, তবে সব মোটা মানুষই বেশি খায় না। অনেকেই আছেন যাঁরা হরমোনজনিত কারণে বা বংশগতভাবেই মোটা। তাই সব মোটা নারীরাই যে বেশি খায়, এটা মোটেও সত্যি কথা নয়।
মোটা নারীরা অলস বেশি হয়ঃ
ভারী শারীরিক গঠনের জন্য মোটা নারীদের নড়াচড়া করা একটু কষ্টকর বটে, তবে তার মানে এই নয় যে তাঁরা অলস হন। অনেকেই আছেন যাঁরা প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম করে থাকেন। শারীরিক পরিশ্রম করলে ওজন কমে বটে তবে সব ক্ষেত্রে নয়। যাঁরা হরমোনের সমস্যার কারণে মোটা হয়ে যান তাঁদের কায়িক পরিশ্রম করেও ওজন কমানো বেশ কঠিন। ফলে তাঁরা কাজ করলেও শারীরিক গঠনের ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। তাই মোটা মাত্রেই যে অলস, এ কথাটি একেবারেই ভুল ধারণা।
মোটা নারীদের কেউ ভালোবাসে নাঃ
সুন্দরের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরদিনের। সুন্দর শারীরিক গঠনের নারী ও পুরুষরা সবাইকে আকৃষ্ট করে সহজেই। তাই এ ধারণাটা আমাদের সমাজে বহুলভাবে প্রচলিত যে মোটাদের কেউ ভালোবাসে না। অথচ এটিও ভুল ধারণা। মোটা মানুষদের জীবনেও প্রেম আসে, তাঁদেরকেও কেউ না কেউ ভালোবাসে। বরং পুরুষরা প্রেম করার চিকন নারী খোঁজে আর বিয়ে করে মোটা নারী। বিশ্বাস না হলে মিলিয়ে দেখুন।
মোটা নারীরা সৃজনশীল হয় নাঃ
প্রতিটি নারীই জন্মগত ভাবে সৃজনশীল ক্ষমতা নিয়ে পৃথিবীতে আসে, কেউ কম কেউ বেশি। এই সৃজনীশক্তি কারোটা বিকশিত হয়, কারোটা হয় না। মোটা নারীদের সৃজনশীল হয় না এ কথা মোটেও ঠিক না। শিল্পকলার অনেক ক্ষেত্রেই অনেক মোটা মানুষ অবদান রেখেছেন। যেমন নায়িকা গায়িকা, চাকুরীজীবী সবখেত্রেই একটু লক্ষ্য করে দেখুন বেশিরভাগ নারীই কিন্তু মোটা। কাজেই তাঁদের ভারী শরীর কখনোই তাঁদের সৃজনশীলতায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
আমি একজন অতি সামান্য মানুষ। পেশায় একজন লেখক,ব্লগার এবং ইউটিউবার। লেখালেখি করতে খুব ভালো লাগে। আমার এই সামান্য প্রয়াসের মাধ্যমে মানুষের কিছু শেখাতে পারা ও বিনোদন দেওয়ার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পায়।
0 coment rios: