আর আমার এমন কোনো মানুষ নেই যার কাছে আমি পালমাকে রেখে যেতে পারি। তুমি দয়া করে আমাকে পালমাকে নিয়ে যাওয়ার পারমিশন দাও। এ কথা শোনার পর ইগর উপর তার দয়া হয় তাই সে যখনই ইগরকে পারমিশন দিতে যাবে ঠিক তখনই সেখানে এয়ারপোর্ট এর ম্যানেজার ক্লারা চলে আসে। তখন সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে কিন্তু ক্লারা তার কোন কথাই শুনতে চায় না। সে বলে মেডিকেল সার্টিফিকেট ছাড়া কোন প্রাণীকে প্লেনে উঠানোর রুলস নেই। তাই আপনি এই কুকুরটিকে নিয়ে যেতে পারবেন না। একথা বলে ক্লারা সেখান থেকে চলে যায়। ইগর তখন বুঝতে পারে যে সে পালমাকে তার সাথে নিয়ে যেতে পারবে না। তাই সে ব্যাগ থেকে একটি বল অনেক দূরে ছুড়ে মারে তখন সঙ্গে সঙ্গে পালমা দৌড়ে বলটি আনতে যায়। পালমা মনে করছিল তার মালিক তার সাথে বল নিয়ে খেলা করছে। কিন্তু যখনই পালমা পেছনে ঘুরে তাকায় তখন সে দেখতে পায় ইগর তাকে রেখে প্লেনে উঠে পড়েছে। তারপর পালমা বুঝতে পেরে বিমানটিকে থামানোর চেষ্টা করে। সে দৌড়ে বিমানের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। এক পর্যায়ে বিমান টি দাড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কিছুক্ষন পর পালমাকে ফাকি দিয়ে বিমানটি চলে যায়।
পালমা অপলক দৃষ্টিতে বিমানের দিকে তাকিয়ে থাকে। অনেকটা সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও সেখান থেকে কুকুরটি যাচ্ছিল না। তাই তাকে ধরার জন্য সেখানেই সিকিউরিটি অফিসার কলিকো চলে আসে। পালমা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে সেখান থেকে পালাতে শুরু করে। সে দৌড়াতে দৌড়াতে এয়ারপোর্ট এর মধ্যে থাকা একটি পরিত্যাক্ত ঘরে লুকায়ে যায়। সেখানে টিকলো নামের একজন মেকানিক এই দৃশ্য দেখতে পায় এবং সে কুকুরটিকে তাদের হাত থেকে বাঁচিয়ে নেই। কারণ সে বুঝতে পেরেছিলো যে হয়তো কুকুরটি কোন দুশ্চিন্তায় আছে। তাকে একটি জায়গাতে লুকিয়ে রাখে আর তাকে কিছু খাবার খেতে দেয়। কিন্তু ঠিক তখনই পালমা একটি প্লেনের শব্দ শুনতে পায় আর সে খাবার গুলো রেখে দিয়ে অনায়াশেই প্লেনের দিকে চলে যায় কারণ তার কাছে মনে হয়েছে তার মালিক তাকে নিতে এসেছে।
আসলে সেই প্লেনে করে লিস্ট নামের একজন মিনিস্টার কয়েকজন ফরেনারদের সাথে সামনে হতে যাওয়া অলিম্পিক ম্যাচের প্রস্তুতি দেখতে এসেছে। এখানে আমরা প্লেনের পাইলট তার সাথে তার 9 বছরের ছেলে জ্যাকলিন ছিল। পাইলট প্লেনটিকে ল্যান্ডিং করার প্রস্তুতি নিয়েছিল কিন্তু ঠিক তখনই পাইলট দেখতে পাই কুকুরটি রান ওয়ে দিকে ছুটে আসছে। সে খুব দ্রুত সময়ে প্লেনটিকে আবারো উপরে তুলে নেয় তা না হলে সেখানে অনেক বড় ধরনের অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেত কিন্তু হঠাৎ করেই প্লেন্টি উপরে উঠানোর কারণেই প্লেনের মধ্যে থাকা সকলের অনেক জোরে ধাক্কা লাগে। পাইলট কিছুক্ষণের মধ্যেই প্লেনটিকে একটু দুরে নিয়ে গিয়ে ল্যান্ড করে। তবে এ ঘটনায় মিনিস্টার লিস্ট অনেক রেগে যায়। প্লেন থেকে নেমে ম্যানেজারের কাছে কমপ্লেইন জানায় তখন ম্যানেজার ক্লারা তাকে বলে আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কুকুরটিকে এখান থেকে তাড়ানোর ব্যবস্থা করছি । এরপর সঙ্গে সঙ্গে ক্লারা সিকিউরিটি অফিসারকে তার কাছে আসতে বলে।
পালমা প্লেনের প্রতিটি যাত্রীকে মনোযোগ সহকারে দেখতে থাকে কারণ তার কাছে মনে হয় এই প্লেনে হয়তো ইগর রয়েছে। এমন সময় সিকিউরিটি অফিসার তার কলিগদের সাথে করে সেখানে আসে এবং অনেক চেষ্টা করার পর কুকুরটিকে একটি বাসের মধ্যে বন্দি করে ফেলে। কিন্তু পালমা কিছুতেই সেখান থেকে যেতে চাইছিল না। এদিকে ম্যানেজার এর পক্ষ থেকে কুকুর টিকে শুট করে মেরে ফেলার অর্ডার এসেছে। এ কথা শোনার পর নিনা এবং পাইল্ট এটা করতে বারণ করে। তারা বলে যে একটি অবুঝ প্রাণীকে এভাবে মেরে ফেলাটা ঠিক হবে না। কিন্তু তাদের কোন কথাই শুনতে চায় না। এদিকে ৯ বছরের ছেলে জ্যাকলিন দাঁড়িয়ে তাদের সমস্ত কথোপকথন শুনে।
ধরনের অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেত।এই কথা শুনে ক্লারা বিষয়টিকে বুঝতে পারে তাকে সান্ত্বনা দেয় আর বলে তুমি কোন চিন্তা করো না আশা করি খুব শীঘ্রই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। রাতের বেলা স্লেভ জেকে নিয়ে তার বাড়িতে ফিরে আসে আর এখানে আমরা তাদের কথোপকথন শুনে বুঝতে পারি যে জ্যাক তার বাবাকে খুব একটা পছন্দ করে না কারণ তার বাবা তাকে এবং তার মাকে খুব একটা সময় দিতে পারত না। জ্যাক এবং তার বাবা বর্তমানে একটি নতুন বাড়িতে শিফট হয়েছে । কিন্তু জ্যাকের কাছে এই নতুন জায়গাটি একদমই পছন্দ হয় না তাই রাতের বেলা সে লুকিয়ে লুকিয়ে সেই এয়ারপোর্টে চলে যায় যাতে করে সে একটি ফ্লাইটে করে তার আগের বাড়িতে চলে যেতে পারে। কিন্তু এখানকার কাউন্টার অফিসার তাকে কোন টিকেট দেয় না কারণ সে একটি ছোট বাচ্চা ছিল তাছাড়া কাউন্টার অফিসারের কাছে মনে হয় যে এই বাচ্চাটি হয়তো তার বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে তাই সে একটি পুলিশ অফিসারকে জ্যাক এর পেছনে লাগিয়ে দেয়। এভাবেই এয়ারপোর্টে যাওয়া আসার ফলে কুকুরটির সাথে জ্যাকের আলাদা একটা সম্পর্ক হয়ে যায়।
এক পর্যায়ে কুকুরের এমন কার্যকলাপ দেখে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ রানওয়ের সামনে পালমার জন্য একটি খাচা তৈরি করে দেই। যাতে করে কোন যাত্রী নামলে পালমা সেখান থেকেই সবকিছু দেখতে পারে। কিন্তু তাতে জ্যাক্লিন অঙ্কে কষ্ট পায় কারণ সে চায় পালমা খোলামেলা থাকুক। এতে করে পালমাও খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পালমাকে ডাক্তার দেখানো হয় কিন্তু তাতে কোন লাভ হয় না। জ্যকক্লিন তার বাবার কাছে পালমাকে মুক্তির জন্য অনুরোধ করে। তখন জ্যাক্লিন একজন সাংবাদিকের সাথে যোগাযোগ করেন এবং পালমার সকল ইতিহাস তুলে ধরেন। সেই সাংবাদিক পালমার এই করুন ইতিহাস জানার পর সে এই ঘটনাটি সংবাদের মাধ্যমে প্রচার করে। তারপর পালমাকে সেখান থেকে জ্যাকলিনের বাড়িতে নিয়ে আসে। তারা বাড়িতে খুব আন্নদের সাথেই পার করে। হঠাত এয়ারপোর্ট থেকে স্লেভের কাছে একটি ফোন আসে। পালমাকে নিতে তার মালিক ইগর এসেছে। তখন স্লেভ তার ছেলে জ্যাক ও পালমাকে নিয়ে এয়ারপোর্টে চলে আসেন।
ইগর বিমান থেকে নামার পর পালমার দিকে তাকায়। পালমাও ইগরের দিকে তাকায় কিন্তু প্রথমে চিনতে কষ্ট হয়। এরপর পালমা ইগর কাছে চলে যায়। কিন্তু পালমা ইগর প্রতি আগের মত এক্সসাইটেট ছিল না। এরপর জ্যাক্লিন পালমার গলার বেল্টি ইগরকে দিয়ে মন খারাপ করে সেখান থেকে চলে যেতে থাকে। এরপর পালমাও বিমানে উঠতে চাইছিল না। সবাই অনেক কষ্ট করে পালমাকে বিমানে উঠিয়ে দেই। কিন্তু এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের সাময়িক সমস্যার কারণে ফ্লাইট লেট হয় এতে করে সেই ফ্লাইটে থাকা মিনিস্টার লিস্ট খুব রেগে যায়। তারপর সে ইগর আর সেই কুকুরটিকে দেখতে পায় ঐ সময় এয়ারপোর্টের ম্যানেজার ক্লারা চলে আসেন এবং ইগরের কাছে পালমার মেডিকেল সার্টিফিকেট চাই। ঐ সময় মিনিস্টার জানতে চায় মেডিকেল সার্টিফিকেট কেন লাগবে। তখন ক্লারা বলে মেডিকেল সার্টিফিকেট এয়ারফরসের একটি গুরুত্তপুরন রুলস। তাছাড়া এটা না মানলে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যায়। তখন ইগর চালাকি করে বলে এটা আমার কুকুর না। এই বলে কুকুরকে ছেড়ে দেই। তখন কুকুরটি দৌড়ে জ্যাক্লিনের কাছে ছুটে যায়। এ থেকে বুঝলাম চোখের আড়াল হলে মনের আড়ালও হয়ে যায় । তাছাড়াও ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু জয় করা যায়।
0 coment rios: